Job Seeker

চাকরি পেতে বাড়তি যোগ্যতা কি কি লাগে?

চাঁদ যেমন দূর্লভ বস্তু একটা ভালো চাকরি বর্তমান প্রেক্ষাপটে তেমনি দূর্লভ!!! আর এইরকম একটা অবস্থায় নতুনরা যখন নিজেদের জীবনবৃত্তান্ত লিখতে যায়, তখন বাড়তি যোগ্যতার বিষয়গুলো লিখার সময় দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়ে যায়। বুঝে উঠতে পারে না, ঠিক কী কী যোগ্যতা থাকলে নিয়োগকর্তারা তাঁকে সাক্ষাৎকারে ডাকবেন। আবার অনেকে যোগ্যতার ব্যাপারে লিখার সময় অনেক কিছুই লিখে, কিন্তু বাস্তবে সেইসব গুণাগুণ যদি না থাকে তাহলেও কিন্তু মহা বিপদ।

"আসলে চাকরি পেতে কিছুই লাগেনা! শুধু টাকা হলেই চাকরিটা পেয়ে যাবেন" এরকম বহু কথা আমাদের সমাজে প্রচলিত। কথা একদম সত্য! কারণ মামা, খালু কিংবা টাকা থাকলে চাকরিটা হবেনা কেন? আসলে চাকরিটা মামা, খালু আর টাকা পয়সা ছাড়াও হয়! এর জন্য কম্পিটিশনের এই চাকরির বাজারে অন্য সবার থেকে কয়েক ধাপ এগিয়ে থাকতে চাইলে, যেই চাকরির জন্যই আপনি আবেদন করুন না কেন, সেই উক্ত কাজের ব্যাপারে অভিজ্ঞতা থাকার পাশাপাশি অন্যান্য বেশ কিছু গুণাগুণ আপনার থাকা আবশ্যক। তাহলে চলুন জেনে নেই, যেই চাকরির জন্য এপ্লাই করবেন সেই কাজ ছাড়াও আর বাড়তি কি কি যোগ্যতা আপনার থাকা উচিৎ।

১) বিদেশি ভাষায় দক্ষতা অর্জন

আমাদের মাতৃভাষা বাংলা কিন্তু চাকরী করতে গেলে বাংলা ভাষার পাশাপাশি ইংরেজি তে ভাল দক্ষতা থাকতে হয়। কিন্তু আপনার যদি আরও কিছু বিদেশি ভাষার উপর দক্ষতা থাকে সেটা আপনার জন্য হতে পারে একটা প্লাস পয়েন্ট। কারন এখন বিভিন্ন দেশের মানুষ বাংলাদেশে ইনভেস্ট করে। সেই জন্য প্রতিষ্ঠানও চায় একাধিক ভাষায় দক্ষ ব্যক্তি। এ জন্য একাধিক বিদেশি ভাষায় দক্ষতা অর্জন জরুরি।

২) সামাজিক মাধ্যম সম্পর্কে দক্ষতা অর্জন

বর্তমান যুগ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে যুগ। বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানই এখন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নিজেদের উপস্থিতি জানান দেয় নিয়মিত। নিজেদের কাজ এবং নিজেদের প্রতিষ্ঠানের কর্ম দক্ষতা সবার সামনে তুলে ধরতে সামাজিক ভার্চ্যুয়াল জগত এখন অনেক বড় ভুমিকা পালন করে এবং ভার্চ্যুয়াল জগতে নিজেদের প্রতিনিধি হিসেবে কর্মীদেরও সক্রিয় দেখতে চায় প্রতিষ্ঠান। স্বাভাবিকভাবেই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নিজেদের উপস্থাপনের জন্য বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীর প্রয়োজন হয়। তাই এ ধরনের দক্ষতা বাড়তি যোগ্যতা হিসেবেই বিবেচনা করেন নিয়োগকর্তারা।

৩) প্রযুক্তি সম্পর্কে দক্ষতা অর্জন

বর্তমান যুগ প্রযুক্তির যুগ। তাই সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে আমাদের Technology সম্পর্কে ধারনা থাকতে হবে। আজকাল প্রায় সব অফিসে কম্পিউটার এবং নানা ধরনের ডিভাইস ব্যবহার করে কাজ করা হয়। আপনার যদি Technology সম্পর্কে ভাল ধারনা থাকে এবং অফিসের প্রয়োজনে আপনি ভাল সার্ভিস দিয়ে পারেন তাহলে কর্ম ক্ষেত্রে আপনার মর্যাদা বা কদর অন্য সবার চেয়ে অনেক বেড়ে যাবে।

৪) প্রোগ্রামিং জানা

কম্পিউটারের যুগে কম্পিউটারের কাজ না পারলে কি চলে বলুন? কম্পিউটার জানার পাশাপাশি যদি প্রোগ্রামিং বা কোডিং সম্পর্কে প্রাথমিক জ্ঞান থাকে তা হলে সেটা আপনার ক্যারিয়ারকে অন্য সবার থেকে এক ধাপ এগিয়ে রাখতে সাহায্য করবে।

৫) ডেটা অ্যানালাইসিস

ডেটা অ্যানালাইসিস অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বর্তমান সময়ে প্রায় সব কোম্পানিগুলো তথ্য নিয়ে কাজ করে। নিজেদের উন্নতির জন্য যেমন বাজারের খুঁটিনাটি বিভিন্ন তথ্য নিয়ে কাজ করতে হয়, তেমনি গ্রাহকদের আকর্ষণ করতেও প্রয়োজন তথ্যের খেলা। এই তথ্য নিয়ে খেলতে হলে দক্ষ খেলোয়াড় লাগবে। আর সে জন্যই তথ্য বিশ্লেষণ বা ডেটা অ্যানালাইসিসে দক্ষ কর্মী প্রয়োজন। সুতরাং ডেটা অ্যানালাইসিস সম্পর্কে দক্ষতা থাকা মানে আপনি চাকরির ক্ষেত্রে লেভেলের একজন খেলোয়াড় এর তালিকায় থাকবেন। 

৬) ফটোশপে দক্ষতা অর্জন বা ছবি সম্পাদনা

আগেই বলেছি ভার্চ্যুয়াল জগতে এখন সবাই চাই ভার্চ্যুয়াল জগতে সক্রিয় থাকতে। সেক্ষেত্রে কম্পিউটাররে ছবি সম্পাদনার একটা ব্যাপার থাকে। তাই আপনার বস যেকোনো সময় বলে বসতেই পারেন এমন কাজের কথা। যদি সফটওয়্যার ব্যবহার করে ছবি সম্পাদনা করার দক্ষতা আপনার থাকে, তবে চটজলদি বসের নির্দেশে সাড়া দিতে পারবেন। আর জানেনই তো, নিত্যকার দায়িত্বের বাইরে এইটুকু বাড়তি কাজই আপনাকে এনে দেবে বসের সুনজর!

৭) সমস্যা সমাধানের দক্ষতা অর্জন

সমস্যা নেই এমন কোন প্রতিষ্ঠান নেই। প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন হাজারো সমস্যা দেখা দেয়। আর সেই সব সমস্যা সমাধানে প্রয়োজন দায়িত্বশীল দক্ষ কর্মী। নিজেকে সমস্যা সমাধানকারী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এই দক্ষতার কোনো সনদ হয় না। সুতরাং নিজের মস্তিষ্ককে কাজে লাগিয়ে সময় উপযুগী সিদ্ধান্ত দিয়ে সমস্যা সমাধান করার দক্ষতা থাকতে হবে।

৮) লেখা ও বলার দক্ষতা অর্জন

আমাদের মধ্যে অনেকই আছে ভাল লিখতে পারে কিন্তু আট দশ জন মানুষের সামনে দাড়িয়ে নিজের দক্ষতা বলে প্রকাশ করতে পারে না। এই সমস্যা দূর করতে হবে। সবার সামনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বক্তব্য দেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এবং তার সাথে বাংলা ইংরেজি যে ভাষাতেই হোক শুদ্ধভাবে লিখতে জানতে হবে। কারণ সেটিই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আপনার ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে তুলবে, আপনার যোগ্যতা প্রমাণ করবে।

এই উপরের স্কিলগুলো যদি আপনার ভিতর থাকে তাহলে আশা করা যায় কম্পিটিশনের এই চাকরির বাজারে আপনি আপনার পছন্দের জবটি ঠিকই পেয়ে যাবেন।

আর কোন কিছু না করে বেকার বসে থাকলে আপনার উপর চাপ বাড়বে, জীবন নিয়ে হতাশায় ভুগবেন। চাকরি না পেলে ডিপ্রেশনে ভুগবেন। তাই এসব ডিপ্রেশনে ভুগার পরিবর্তে বাসায় থেকে জব খোজার পাশাপাশি আপনার পছন্দের বিষয়গুলোতে স্কিলফুল হতে চাইলে MSB Academy থেকে ঘরে বসে যখন ইচ্ছা তখন কোর্স করুন, আর নিজেকে যুগের সাথে আপডেটেড রাখুন।